‘নিজের দেশ নিজের মাটি -প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিক মূল মাটি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

‘নিজের দেশ নিজের মাটি
প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিক মূল মাটি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

https://www.facebook.com/channelstvuk/videos/1481174445268012/  

https://www.youtube.com/watch?v=FY_LBrWJvTY

আক্রমনাত্বক এবং অবৈধ জমি দখল বাংলাদেশে একটি ‘ঐতিহাসিক ধারায়’ পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশের অপ্রচলিত ভূমি রেকর্ড (নথি/দলিল) ব্যবস্থাপনার পদ্ধতি (ও এটার সঙ্গে দুর্নীতি জড়িত) বাড়তি জমি নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি করে যা ব্রিটিশ বাংলাদেশীদের তাদের ন্যায় সঙ্গত জমি ও সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে।

শত শত (হাজার না হলেও) বিদেশী বাংলাদেশী নাগরিক তাদের মূল মাটি থেকে বিতাড়িত হচ্ছে -তাদের ন্যায় সঙ্গত মালকিানা থেকে – প্রতারনার্পূন পরবিারের সদস্য, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা , বিচার ব্যবস্থা, ও আক্রমনাত্মক এবং অবৈধ ভূমদিস্যুদরে দ্বারা: যাদের রাজনৈতিকভাবে সাহায্য প্রাপ্ত, গুন্ডা বলে।
জমির দাম বেড়ে যাওয়ার জন্য জমির চাহিদা আরও বেড়ে গেছে- জমির মালিকানা লক্ষ্য করে জমি দখলের সিন্ডিকেট (নিষদ) স্থাপন কর হচ্ছে, বিশেষ করে ঐ জমি গুলোর যাদের মালিক প্রবাসীরা। এই সিন্ডিকেট (নিষদ)- এর উপর অনেক অপরাধী ও প্রভাবশালী ব্যক্তির সমর্থন আছে। নকল কাগজ ব্যবহার করে সত্যিকারের মালিকের নাকের ডগা থেকে জমি চুরির চেষ্ঠা করা হচ্ছে । এই প্রক্রয়িা প্রায়ই র্দুনীতিগ্রস্ত আইনজীবী ও সরকারী কর্মর্কতাদের সহায়তায় হয়, যার দরূন জমির মালকিরে এটা সম্পর্কে কিছু করতে অত্যন্ত কঠনি হয়।

তাদের ন্যায্য সম্পদের জন্য লড়াইয়ের পরির্বতে অনেক প্রবাসী দ্বৈত বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য নিজের প্রাণ (জীবন) নিয়ে যুক্তরাজ্যে পালানো’ এরকম মামলায় পরিনত হয়েছে। এটা গরীবদের শহরের বস্তি কিংবা স্স্কোয়াটে বিতাড়িত করার মতই, এক্ষেত্রে যে কোন সময়ই উগ্রতা দেখা দিতে পারে। স্থানীয় গুন্ডাদের ভাড়াটে হিসেবে ব্যবহার করে জমির মালিকদের বন্দুক ও অন্যান্য অস্ত্র দিয়ে হুমকি দেয়া হয়। জমি চুরি শুধু কাগজেই ঘটে না।
ভূমি অধিকার মৌলিক মানবিক অধিকার হিসেবে উভয় জাতীয় এবং আর্ন্তজাতকিতিক আইন দলিল দ্বারা স্বীকৃত। বাংলাদেশের সংবিধান ই.জি মানবাধিকার আইন। মালিকানা নীতি ও সম্পত্তি অধিকার দানে নিশ্চয়তা দিয়েছে। ইউডি এইচ আর ১৯৪৮ অনুচ্ছেদ ১৭ বর্ণিত যে, “কাউকেই যথেচ্ছভাবে তাঁর সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা যাবে না” (বৈজ্ঞানিক গবেষণা ০৯/২০১৫-প্রকাশতি)।

যদি উপরোক্ত বক্তব্য সঠিকই হয়, তবে কেন এত ব্রিটিশ বাংলাদেশী দ্বৈত নাগরিকরা অফুরন্ত অবৈধ জমি দখল আগ্রাসনের স্বীকার হচ্ছে, যদিও ব্রিটিশ বা বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে যথোপযোক্ত সমাধান পাওয়া যাচ্ছে না। এটি যে একটি বড় সমস্যা তা সম্পর্কে উভয় দেশের সরকারই অভিহিত, এটি সুরাহা করার কি প্রয়োজন নেই?
ব্রিটিশ সরকারের অফিসিয়াল (ব্যাক্তিগত) ওয়েব সাইটে নিম্নলিখিত স্পষ্ট বার্তা উল্লেখিত হয়েছেঃ “ব্রিটিশ হাই কমিশন ভূমি বা সম্পত্তি সমস্যার ব্যাপারে বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ নাগরিকদের পক্ষে হস্তক্ষেপ করার দায়বদ্বতা নেই।” বাংলাদেশি সরকার অবশ্য পরোয়া করিনা এরকম পদ্ধতি অবলম্বন করতে, ব্রিটিশ বাংলাদেশি মানুষের কষ্টার্জিত রেমিটেন্স (প্রেরিত অর্থ) বাংলাদেশের পথ ধেয়ে আসছে পঞ্চাশ বছর পূর্ব থেকে যখন প্রথম প্রজন্ম যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছিল এবং যা বাংলাদেশকে নিঃসন্দেহে অত্যন্ত লাভবান করে আসছে।

যুক্তরাজ্যের ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের মতামত অনুসারের এই পরিস্থিতি“ অন্যায় ও অন্যায্য, যেখানে যে কোনো বাংলাদেশিরা ভূমি বিরোধের সুবিধা উপভোগ করছে যা এখন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে । এই থেকে বিবৃত করছি যে “এ অবিচারের ফল বহু বছর ধরে আমরা পাচ্ছি এবং পেয়ে আসছি। আমাদের বর্তমান প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা তাদের পরিচয় হারিয়ে ফেলছে ,তারা কোথা তেকে এসেছে বা তাদের মূল্য কোথায় থেকে উপৎপত্তি তা প্রদর্শন করতে পারছে না।

প্রথম প্রজন্মের ব্রিটিশ বাংলাদেশি ছেলে মেয়ে এবং নাতি নাতনিরা অনুভব করে যে তারা তাদের পিতা এবং পূর্ব পুরুষ, বাংলাদেশরে মানুষ এবং বাংলাদেশী সরকার কর্তৃক হতাশ হয়েছে।

ব্র্যাক হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড লিগ্যাল সার্ভিস (ব্র্যাক মানবাধিকার এবং আইনগত সেবা) এবং পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পি আর আই) দ্বারা পরিচালিত সম্পত্তি বিরোধ অধ্যায়নে দেখা গেছে যে প্রতি পাঁচ পরিবারের এক পরিবার জমি বিরোধে ভোগে এবং তাদেরকে সালিসে প্রতিনিয়ত ঘুষ দিতে হয়। এর মানে বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় চার মিলিয়ন (৪০লাখ) পরিবার এ জমি বিরোধ ভোগছে। গড় ম্যাপ ১৮.৩% পরিবার অমীমাংসীত জমি বিরোধ নিয়ে ভোগছে যা উদ্ঘাটন কাজ পুলিশদের জনে ২২,২৭০ র্অথ ঘুষ প্রদানের উপর নির্ভর করে। এই ম্যাপ আরেকটি জিনিস উদঘাটন করে যে অনেক ভুমি মালিকদের হয় একে অপরের উপর বা পরিবারের সদস্যদের উপর শারীরিক নির্যাতনের অভিজ্ঞতা হয়েছে যা তাদের ভবিষ্যতে পাল্টা নির্যাতনের ¯স্বীকার হওয়ার সম্ভাবনার ভয়ে রাখে। গবেষনায় আরও নিশ্চিত করে যে, যে পরিবারের নারীরা এ ভূমি বিবাদে জড়িত তাদের সময় সহিংসতা ও নিপীড়ন প্রবন ছিল, জানা যায় যে নারীরা এ বৈষম্য যুদ্ধে কঠোর পরীক্ষার সম্মুখীন হন।

তথ্যে আরও বলা হয়েছে যে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহর জমি বিরোধ প্রবণ অঞ্চল সঙ্গে সঙ্গে সিলেট অঞ্চলও। পি আর আই এর একজন সিনিয়র (প্রবীন) অর্থনীতিবিদ এর মতে, “ জমি দ্বন্দ্ব বাংলাদেশে গুরুতর এবং জনসংখ্যার উল্লখ্যেযোগ্য অংশ এই প্রবঞ্চ থেকে ভূগছেন”।

আরও এক ঢাকা এলাট লেট তথ্যানুসারে ১.৯ মিলিয়ন ( ১৯ লাখ ) মামলা বাংলাদেশ বিচার কার্যালয়ে বছর এর পর বছর ধরে ঝুলে আছে। ১৬ কোটি মানুষের দেশে শত বছর পুরনো ব্রিটিশ আমলে ভূমি নিবন্ধন পদ্ধতি, তার উপর জালিয়াতি ভূমি দলিল তো ছিলই এবং বর্তমানেও এটি সাধারণ। অনেক ভূমি এবং ভূমি মালিকরা আবিষ্কার করেন যে তাদের অজান্তে তাদের জমি বিক্রি হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে ক্রেতারা ও এ সমস্যায় আচ্ছন্ন, বিপুল অঙ্কের টাকা পরিশোধ করে ভূমি ক্রয় করে দেখেন জমিতে ভেজাল এতে করে তারও ভূমি বিরোধে জড়িয়ে পরে। দু পক্ষের মানুষ প্রায়ই সুবিশাল অর্থ ব্যয় করতে বাধ্য হয়।
প্রায়ই এক বুলি শোনা যায়, “ কাগজ যার জায়গা তার” এক্ষেত্রে সত্যের কোন মূল্য নেই। অনেক পরিষ্কার কাগজের সম্পত্তি হয় জালিয়াতির মাধ্যমে কর্মকর্তাদের ঘুষ প্রদান করে বা অবৈধভাবে বিশ্বস্ত আত্মীয়রা সম্পত্তি (ভাড়াটে গুন্ডা ভাড়া করে) রাজনৈতিক দল এর সমর্থনে বা স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহো-যোগীতায় দখল করে।
বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ জমি নিবন্ধীকরণ (রেজিষ্ট্রি) পদ্ধতি ডিজিটাল করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে যা সুনিপুণ করা কঠিন হয়ে পড়বে( হস্তচালিত প্রথার মত নয়) যাই হোক এটা সময়ের সাথে পাল্লা দেয়ার মতো একটি নতুন পদ্ধতি, নতুন তরঙ্গরে বিরোধ আসার আগ র্পযন্ত ,যেটা ভভিষ্যতে ঘটতে ও পারে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর লিয়াকত আলী সিদ্দিকী বলেছেন, “ভুমি জরিপ পদ্ধতির আধুনিকায়ন জটিলতা কমাতে সাহায্য করতে পারবে” এবং আরও বলেন, “ যে জমির দলিল জাল ছিল এমন প্রকৃত মালিকের মালিকানা প্রমাণ করতে দীর্ঘ সময় লেগে যেতে পারে”। ঠিক এই সমস্যার সম্মুখীন ব্রিটিশ বাংলাদেশীরা হচ্ছে, যারা জয়ের আশা ছেড়ে এ অফুরন্ত যুদ্ধ লড়ছে।

বাংলাদেশে সরকারের বিবেচনায় রাখা উচিত ব্রিটিশ বাংলাদেশীরা বাংলাদেশের উন্নতিতে অপরিমেয় অবদান রেখে আসছে এবং এখনও রাখছে। সরকারের উচিত তাদেরকে মামলাগুলো হয়রানি বা আতংকের সাথে না লড়তে হয় এমন কোন শালীন পদ্ধতির আইন প্রয়োগ করে তাদের সাহায্য করা। হয়তো তারা দুর্নীতি বিরোধে যুক্তরাজ্যের পদ্ধতির মতো বিক্লল্প বিরোধ সমাধান Alternative Dispute Resolution, (ADR) তৈরি করতে পারেন, এতে ব্রিটিশ বাংলাদেশীরা সামান্য হলেও তথাকথিত প্রবাসী কক্ষ থেকে সাহায্য পেতে পারে।

ব্রিটিশ বাংলাদেশীরা ইতি মধ্যেই মাতৃভূমির জন্য যথেষ্ট ত্যাগ করেছে এবং বাংলাদেশী সরকার দৃঢ় ভাবে এ দ্বায়িত্ব যেন বিচেনা করেন যার ফলশ্রুতিতে এ প্রবাসি মানুষরা তাদের নিজেদের বাচ্চাদেরও নাতি নাতনিদের এবং পরের প্রজন্মেরও মূল পরিচয় বজায় রাখতে পারবেন। এই জমি জালিয়াতি বা ছিনিয়ে নেয়া সহজেই আর মানা যাবে না। এই জমি মালিকদের তাদের পরিচয় ও নিজের দেশ, নিজের মাটি বহাল আমাদের রাখতে দিতে হবে।